খাবার খেয়ে ৩২ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সোমবার সকালে গোপালগঞ্জ জেলা শহরের আল জামিয়াতুল মোহম্মাদিয়া কোর্ট মসজিদ মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ হোটেল মালিক আরিফুল ইসলাম মন্টুকে আটক করে হোটেল বন্ধ করে দিয়েছে। অসুস্থ ৩২ শিক্ষার্থীকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অসুস্থ কয়েকজন হলো- মাহফুজুর রহমান, জাহিদ, আমিন, রমিন শেখ, দ্বীন ইসলাম, মঈনুল ইসলাম, মো. আবদুল্লাহ, সিহাব, সাইদুর, তামিম, রাজিব, আরাফাত, সিয়াম, মিজান, সৌরভ, ইসমাইল।
ওই মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মো. হাফিজুল ইসলাম জানান, সোমবার সকালে শহরের ব্যবসায়ী কোমর উদ্দিন খান ওই মাদ্রাসার এতিমখানার কেরাত বিভাগের ১২৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য শহরের রোমাঞ্চ খাবার ঘর থেকে সকালের নাস্তা খিচুড়ি ও ডিম সরবরাহ করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রথমে ওই খাবার ৬০ জন শিশুর মধ্যে পরিবেশন করা হয়। খাবার খেয়ে পেটব্যথা, খিঁচুনি ও বমি বমি ভাব শুরুর হলে ৩২ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অবশিষ্ট খাবার পরিবেশন বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে গোপালগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম ও সদর থানার ওসি সেলিম রেজা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি জিহাদ (৯), জোনায়েদ (৮), মাহফুজুর রহমানসহ (৯) অন্য অসুস্থ শিক্ষার্থীরা জানায়, সরবরাহকৃত ভুনা খিচুড়ির মধ্যে দেয়া ডিমের কুসুমগুলো তেঁতো ছিল। ওই কুসুম খাওয়ার পরই পেটব্যথা, খিঁচুনি ও বমি বমি ভাব শুরু হয়। অনেকেই আবার বমি করে দেয়।
কোর্ট মসজিদ মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অসুস্থ শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কোর্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটির সদস্য ও ব্যবসায়ী কোমর উদ্দিন খান বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের খাবার দিয়ে থাকি। সোমবার সকালের খাবার অর্ডার দেয়া হয় শহরের পোস্ট অফিস রোডের রোমাঞ্চ খাবার ঘরে। ওই হোটেলের মো. আরিফুল ইসলাম চৌধুরী (মন্টু) শিশুদের সকালের নাশতার জন্য ১২৫ প্যাকেট ভুনা খিচুড়ি ও ডিম সরবরাহ করে।’
গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী শফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করেছি। ধারণা করা হচ্ছে, খাবারের মাধ্যমে এ ঘটনা ঘটেছে। খাবার পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম রেজা জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে হোটেল মালিক আরিফুল ইসলাম মন্টুকে আটক এবং হোটেল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।