দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় প্রশাসনের সমালোচনার মধ্যেই ঠাকুরগাঁও সদরে একটি মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নারগুন ইউনিয়নের পোকাতি পশ্চিমপাড়া গ্রামে সার্বজনীন বিষ্ণু মন্দিরে এই হামলা হয় বলে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মশিউর রহমান জানান।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নারগুন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আটক করা হয়েছে বলে ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদ জানান।
দেওয়ান লালন বলেন, দুপুরে অভিযান চালিয়ে শহর থেকে চেয়ারম্যান পয়গাম আলীকে আটক করা হয়। মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিনি জড়িত রয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সার্বজনীন বিষ্ণু মন্দিরের সভাপতি চক্র মোহন সরকার বলেন, ভক্তরা রাত ১২টার দিকে বাড়ি ফেরার পর দুর্বৃত্তরা দুর্গা মন্দিরের ভেতরে ঢুকে গীতায় আগুন দেয় এবং কালী মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করে।
পশ্চিমপাড়ার সুরেন রায় বলেন, “রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা মন্দিরে ভাঙা প্রতিমা ও পোড়া জিনিসপত্র দেখতে পাই।”
শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বলেন, জড়িতদের ধরতে ইতোমধ্যে ‘অভিযান শুরু করেছে’ পুলিশ।
স্থানীয়রা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের যেসব হামলার ঘটনা ঘটছে, তারই ধারাবাহিকতায় ঠাকুরগাঁওয়ের এ ঘটনা।
স্থানীয় জোছনা রানী বলেন, “এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।”
ঠাকুরগাঁও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারাও দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
গত ৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ১৫টি মন্দিরসহ হিন্দুদের শতাধিক বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার পর স্থানীয় প্রশানের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। শুক্রবার ভোরে একই এলাকায় হিন্দুদের কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
গত কয়েক দিনে যশোর, বরিশাল, ফরিদপুর, বগুড়াসহ দেশেল বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।