প্রতিদিন আমলকি খেলে কি হয়

  • আপডেট সময় : ০৭:০২:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০২৪ ৩১ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রতিদিন সকালে আমলকীর উপকারিতা: পেপটিক আলসার প্রতিরোধ থেকে ওজন কমানো পর্যন্ত

ভূমিকা

আমলকী, যা ভারতীয় গুজবেরি নামেও পরিচিত, আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য এক অনন্য উপকারী ফল। এটি দীর্ঘকাল ধরে আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং এর বহুবিধ স্বাস্থ্যকর গুণাবলী রয়েছে। প্রতিদিন সকালে আমলকীর জুস খাওয়া আপনার শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে। পেপটিক আলসার প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ওজন কমানো ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আমলকীর কার্যকারিতা সত্যিই বিস্ময়কর। এই নিবন্ধে, আমরা আমলকীর বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করবো এবং কেন এটি আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত তা ব্যাখ্যা করবো।

পেপটিক আলসার প্রতিরোধে আমলকীর ভূমিকা

পেপটিক আলসার এক ধরনের ঘা যা পাকস্থলি বা ক্ষুদ্রান্ত্রের অভ্যন্তরীণ আবরণে হয়। এটির প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত অ্যাসিড নিঃসরণ, হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এবং দীর্ঘ সময় ধরে ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার। পেপটিক আলসারের লক্ষণগুলির মধ্যে থাকে পেটের উপরে জ্বালা, ফুলে যাওয়া এবং হজমের সমস্যা।

আমলকী পেপটিক আলসার প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর। এতে বিদ্যমান উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি পেপটিক আলসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা পাকস্থলির আবরণকে ফ্রি র‍্যাডিক্যালস দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এছাড়া, আমলকীর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ পাকস্থলির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা আলসার গঠনের একটি সাধারণ কারণ।

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আমলকীর জুস পান করলে পাকস্থলির পিএইচ স্তর ভারসাম্য রক্ষা করে এবং আলসার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। আমলকীতে উপস্থিত ট্যানিনস এবং পলিফেনলস পাকস্থলির অভ্যন্তরীণ আবরণকে শক্তিশালী করে, যা পাকস্থলির অ্যাসিডের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করে।

শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূরীকরণে আমলকী

আমাদের আধুনিক জীবনধারা এবং পরিবেশের কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত পদার্থ জমা হয়, যা শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিষাক্ত পদার্থ দূর করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ডিটক্সিফিকেশন, এবং এই প্রক্রিয়ায় আমলকী একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আমলকী একটি প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার, যা লিভার, কিডনি এবং রক্তের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত উচ্চমাত্রার ফাইবার অন্ত্র থেকে বর্জ্য পদার্থ দূর করে, যা শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমা হওয়ার ঝুঁকি কমায়। আমলকীর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ ফ্রি র‍্যাডিক্যালসকে নিরপেক্ষ করে, যা শরীরের কোষে ক্ষতি করে এবং বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী রোগ সৃষ্টি করতে পারে।

লিভার হলো শরীরের প্রধান ডিটক্সিফিকেশন অঙ্গ। আমলকী লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ায়, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এছাড়া, আমলকীর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ লিভারের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা প্রায়ই বিষাক্ত পদার্থের অতিরিক্ত কারণে ঘটে।

আমলকী কিডনির স্বাস্থ্যও রক্ষা করে, কারণ এটি প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ায়, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। নিয়মিত আমলকীর জুস পান করলে কিডনির পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে এবং মূত্রাশয়ের সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়।

ডিটক্সিফিকেশনের জন্য, সকালে খালি পেটে আমলকীর জুস পান করা উপকারী। এটি শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে এবং বিষাক্ত পদার্থ সারা দিন ধরে কার্যকরভাবে দূর করতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে আমলকীর ভূমিকা

ওজন কমানো এবং একটি সুস্থ ওজন বজায় রাখা স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমলকী একটি চমৎকার খাদ্য উপাদান যা আপনার ওজন কমানোর যাত্রায় সহায়ক হতে পারে। এটি কম ক্যালোরিযুক্ত এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত, যা ওজন কমানোর ডায়েটের জন্য আদর্শ।

আমলকীর উচ্চ ফাইবার কন্টেন্ট পূর্ণতার অনুভূতি প্রদান করে, যার ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া বা খিদে লাগার প্রবণতা কমে যায়। এছাড়া, আমলকী বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধিতে সহায়ক, যা শরীরের ক্যালোরি পোড়ানোর হার বাড়ায়। অধিকতর বিপাক হার মানে শরীর বিশ্রামে থাকাকালীনও বেশি ক্যালোরি পোড়ায়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

আমলকী হজমে সহায়ক, যা হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। দুর্বল হজম প্রক্রিয়া খাদ্য পেটে জমা হওয়ার কারণ হতে পারে, যা ফোলাভাব এবং ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়। আমলকী হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, এনজাইম উৎপাদন বাড়ায় এবং পুষ্টি শোষণ উন্নত করে। এটি শুধুমাত্র ওজন কমাতে সাহায্য করে না, বরং শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলি নিশ্চিত করে।

আমলকীর গুঁড়ো মধুর সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন খাওয়া ওজন কমাতে আরও কার্যকর হতে পারে। এই সংমিশ্রণটি শুধুমাত্র স্বাদ বৃদ্ধি করে না, বরং সারাদিন ধরে শক্তির টেকসই সরবরাহ নিশ্চিত করে, যা আপনাকে সক্রিয় রাখে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আমলকীর ভূমিকা

উচ্চ রক্তচাপ, বা হাইপারটেনশন, একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা হৃদরোগ, স্ট্রোক, এবং কিডনির সমস্যা বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমলকী প্রাকৃতিকভাবে এবং কার্যকরভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।

আমলকী পটাসিয়ামের সমৃদ্ধ একটি ফল, যা শরীরে সোডিয়ামের প্রভাবকে ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে। সোডিয়াম শরীরে জল ধারণ করে, যা রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং ফলস্বরূপ রক্তচাপ বাড়ায়। পটাসিয়াম শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়, ফলে রক্তচাপের স্তর কমে যায়।

আমলকীর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি, বিশেষত ভিটামিন সি এবং পলিফেনলস, রক্তনালীগুলির স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করতে সাহায্য করে। রক্তনালীগুলি স্থিতিস্থাপক থাকলে তারা সহজেই সম্প্রসারিত ও সংকুচিত হতে পারে, যা রক্ত প্রবাহকে সহজ করে এবং হৃদয়ের উপর চাপ কমায়। এটি উচ্চ রক্তচাপ এবং সংশ্লিষ্ট জটিলতার ঝুঁকি কমায়।

আমলকীর মৃদু ডিউরেটিক প্রভাবও রয়েছে, যা রক্তচাপ কমাতে সহায়ক। এই প্রভাবটি উচ্চ রক্তচাপের ব্যক্তিদের জন্য উপকারী, কারণ এটি রক্ত প্রবাহের পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং হৃদয়ের কাজ কমিয়ে দেয়।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন আমলকী জুস, গুঁড়ো বা কাঁচা ফল হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। আমলকীর গুঁড়ো মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে দ্রুত এবং দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল পাওয়া যায়।

আমলকীর অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা

আমলকী শুধুমাত্র পেপটিক আলসার প্রতিরোধ, শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূরীকরণ, ওজন কমানো এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর নয়, এটি আরও অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। নিম্নলিখিত কারণগুলি আমলকীকে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যথেষ্ট:

  1. ইমিউন সিস্টেম বাড়ায়: আমলকীতে বিদ্যমান ভিটামিন সি ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে এবং শরীরকে সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে। নিয়ম

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

Categories

প্রতিদিন আমলকি খেলে কি হয়

আপডেট সময় : ০৭:০২:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০২৪

প্রতিদিন সকালে আমলকীর উপকারিতা: পেপটিক আলসার প্রতিরোধ থেকে ওজন কমানো পর্যন্ত

ভূমিকা

আমলকী, যা ভারতীয় গুজবেরি নামেও পরিচিত, আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য এক অনন্য উপকারী ফল। এটি দীর্ঘকাল ধরে আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং এর বহুবিধ স্বাস্থ্যকর গুণাবলী রয়েছে। প্রতিদিন সকালে আমলকীর জুস খাওয়া আপনার শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে। পেপটিক আলসার প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ওজন কমানো ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আমলকীর কার্যকারিতা সত্যিই বিস্ময়কর। এই নিবন্ধে, আমরা আমলকীর বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করবো এবং কেন এটি আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত তা ব্যাখ্যা করবো।

পেপটিক আলসার প্রতিরোধে আমলকীর ভূমিকা

পেপটিক আলসার এক ধরনের ঘা যা পাকস্থলি বা ক্ষুদ্রান্ত্রের অভ্যন্তরীণ আবরণে হয়। এটির প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত অ্যাসিড নিঃসরণ, হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এবং দীর্ঘ সময় ধরে ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার। পেপটিক আলসারের লক্ষণগুলির মধ্যে থাকে পেটের উপরে জ্বালা, ফুলে যাওয়া এবং হজমের সমস্যা।

আমলকী পেপটিক আলসার প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর। এতে বিদ্যমান উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি পেপটিক আলসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা পাকস্থলির আবরণকে ফ্রি র‍্যাডিক্যালস দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এছাড়া, আমলকীর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ পাকস্থলির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা আলসার গঠনের একটি সাধারণ কারণ।

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আমলকীর জুস পান করলে পাকস্থলির পিএইচ স্তর ভারসাম্য রক্ষা করে এবং আলসার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। আমলকীতে উপস্থিত ট্যানিনস এবং পলিফেনলস পাকস্থলির অভ্যন্তরীণ আবরণকে শক্তিশালী করে, যা পাকস্থলির অ্যাসিডের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করে।

শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূরীকরণে আমলকী

আমাদের আধুনিক জীবনধারা এবং পরিবেশের কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত পদার্থ জমা হয়, যা শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিষাক্ত পদার্থ দূর করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ডিটক্সিফিকেশন, এবং এই প্রক্রিয়ায় আমলকী একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আমলকী একটি প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার, যা লিভার, কিডনি এবং রক্তের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত উচ্চমাত্রার ফাইবার অন্ত্র থেকে বর্জ্য পদার্থ দূর করে, যা শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমা হওয়ার ঝুঁকি কমায়। আমলকীর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ ফ্রি র‍্যাডিক্যালসকে নিরপেক্ষ করে, যা শরীরের কোষে ক্ষতি করে এবং বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী রোগ সৃষ্টি করতে পারে।

লিভার হলো শরীরের প্রধান ডিটক্সিফিকেশন অঙ্গ। আমলকী লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ায়, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এছাড়া, আমলকীর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ লিভারের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা প্রায়ই বিষাক্ত পদার্থের অতিরিক্ত কারণে ঘটে।

আমলকী কিডনির স্বাস্থ্যও রক্ষা করে, কারণ এটি প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ায়, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। নিয়মিত আমলকীর জুস পান করলে কিডনির পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে এবং মূত্রাশয়ের সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়।

ডিটক্সিফিকেশনের জন্য, সকালে খালি পেটে আমলকীর জুস পান করা উপকারী। এটি শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে এবং বিষাক্ত পদার্থ সারা দিন ধরে কার্যকরভাবে দূর করতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে আমলকীর ভূমিকা

ওজন কমানো এবং একটি সুস্থ ওজন বজায় রাখা স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমলকী একটি চমৎকার খাদ্য উপাদান যা আপনার ওজন কমানোর যাত্রায় সহায়ক হতে পারে। এটি কম ক্যালোরিযুক্ত এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত, যা ওজন কমানোর ডায়েটের জন্য আদর্শ।

আমলকীর উচ্চ ফাইবার কন্টেন্ট পূর্ণতার অনুভূতি প্রদান করে, যার ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া বা খিদে লাগার প্রবণতা কমে যায়। এছাড়া, আমলকী বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধিতে সহায়ক, যা শরীরের ক্যালোরি পোড়ানোর হার বাড়ায়। অধিকতর বিপাক হার মানে শরীর বিশ্রামে থাকাকালীনও বেশি ক্যালোরি পোড়ায়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

আমলকী হজমে সহায়ক, যা হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। দুর্বল হজম প্রক্রিয়া খাদ্য পেটে জমা হওয়ার কারণ হতে পারে, যা ফোলাভাব এবং ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়। আমলকী হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, এনজাইম উৎপাদন বাড়ায় এবং পুষ্টি শোষণ উন্নত করে। এটি শুধুমাত্র ওজন কমাতে সাহায্য করে না, বরং শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলি নিশ্চিত করে।

আমলকীর গুঁড়ো মধুর সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন খাওয়া ওজন কমাতে আরও কার্যকর হতে পারে। এই সংমিশ্রণটি শুধুমাত্র স্বাদ বৃদ্ধি করে না, বরং সারাদিন ধরে শক্তির টেকসই সরবরাহ নিশ্চিত করে, যা আপনাকে সক্রিয় রাখে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আমলকীর ভূমিকা

উচ্চ রক্তচাপ, বা হাইপারটেনশন, একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা হৃদরোগ, স্ট্রোক, এবং কিডনির সমস্যা বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমলকী প্রাকৃতিকভাবে এবং কার্যকরভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।

আমলকী পটাসিয়ামের সমৃদ্ধ একটি ফল, যা শরীরে সোডিয়ামের প্রভাবকে ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে। সোডিয়াম শরীরে জল ধারণ করে, যা রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং ফলস্বরূপ রক্তচাপ বাড়ায়। পটাসিয়াম শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়, ফলে রক্তচাপের স্তর কমে যায়।

আমলকীর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি, বিশেষত ভিটামিন সি এবং পলিফেনলস, রক্তনালীগুলির স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করতে সাহায্য করে। রক্তনালীগুলি স্থিতিস্থাপক থাকলে তারা সহজেই সম্প্রসারিত ও সংকুচিত হতে পারে, যা রক্ত প্রবাহকে সহজ করে এবং হৃদয়ের উপর চাপ কমায়। এটি উচ্চ রক্তচাপ এবং সংশ্লিষ্ট জটিলতার ঝুঁকি কমায়।

আমলকীর মৃদু ডিউরেটিক প্রভাবও রয়েছে, যা রক্তচাপ কমাতে সহায়ক। এই প্রভাবটি উচ্চ রক্তচাপের ব্যক্তিদের জন্য উপকারী, কারণ এটি রক্ত প্রবাহের পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং হৃদয়ের কাজ কমিয়ে দেয়।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন আমলকী জুস, গুঁড়ো বা কাঁচা ফল হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। আমলকীর গুঁড়ো মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে দ্রুত এবং দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল পাওয়া যায়।

আমলকীর অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা

আমলকী শুধুমাত্র পেপটিক আলসার প্রতিরোধ, শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূরীকরণ, ওজন কমানো এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর নয়, এটি আরও অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। নিম্নলিখিত কারণগুলি আমলকীকে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যথেষ্ট:

  1. ইমিউন সিস্টেম বাড়ায়: আমলকীতে বিদ্যমান ভিটামিন সি ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে এবং শরীরকে সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে। নিয়ম