সংবাদ শিরোনাম ::
প্রচ্ছদ /
অন্যান্য, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক, আবহাওয়া, ইতিহাস-ঐতিহ্য, এশিয়া, ঢাকা বিভাগ, তথ্য-প্রযুক্তি, নাটক, ভ্রমণ, রাজনীতি, সিনেমা, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
রোমান্টিক কাহিনী
- আপডেট সময় : ০৩:৫৩:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৪ ৫৯ বার পড়া হয়েছে
-“বেবি আমার বাসা থেকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে যে।”
-“কোন একটা অজুহাত কর।”
-“আর কত??? সব অজুহাতই যে শেষ হয়ে গেল।তুমি তারাতাড়ি বড় হয়ে যাও বেবি। “
-“এইতো সামনের মাসেই আমার জে.এস.সি এক্সাম।তারপরই ক্লাস নাইন,মোটামুটি একটা বিয়ের বয়স হয়ে যাবে, এই কয়টা দিন একটু দেখ।”
- “হ্যাঁ,দেখছি কি করা যায়। আজকেই একটা মেয়ে দেখতে যেতে হবে।”
-“কি????? “
-“হ্যাঁ।কি যে করি, মা আদা জল খেয়ে লেগেছে এবার বিয়ে দিয়েই ছাড়বে বোধয়।”
-“এই শোন, তুমি মেয়ে দেখতে যাও ভাল কথা, কিন্তু ভুলেও মেয়ের দিকে তাকিও না যেন।”
-“হ্যাঁ ঠিক আছে।”
-“আর হ্যাঁ, এবারও বলে দিও মেয়ে দেখতে ভাল না।”
-“গত বিশ বার এই একই কথা বলছি, এবারো তাই বললে বাবা মারবে।”
-“তাহলে কি করবে?”
-“চাপ আছে।তবুও দেখছি কি করা যায়।”
বলে ফোনটা রেখে দিলাম।
আরে ভাই…জীবনটা বেদনা, ভার্সিটিতে ওঠার পর সবাই বলল প্রেম করা দরকার, করলাম।সবাই বলল, প্রেম করলে ছোটদের সাথে করতে হয়,এতে চাপও কম থাকে,আর পজিটিভ দিকও থাকে।সেইটাই করলাম, কিন্তু বিপদ!!! একটু বেশিই ছোট হইয়া গেছে। ওদিকে আমার চাকরি হইয়া গেছে, এটাও একটু বেশিই তারাতাতাই হয়ে গেছে।তাই এখন বাবা-মা বিয়ে দেওয়ার জন্য উইঠা পইরা লাগছে। আজকে আবার একটা মেয়ে দেখতে যেতে হবে। না, এমনিতে মেয়ে দেখতে যাইতে খারাপ লাগে না, জমপেশ একটা খাওয়াদাওয়াতো হয়।তাই মেয়ে দেখতে যাওয়ার সময় আমি বারন করি না কোন।
যাই হোক,গেলাম মেয়ে দেখতে।সবাই কথা বলছে, আমি বসে বসে অপেক্ষা করছি।মেয়ে আসার জন্য না, খাবার আসার জন্য। কিন্তু খাবার নিয়ে কেউ আসছে না কেন?
ওদিকে গফ মেসেজ দিচ্ছে, “আমি আজ একটু ব্যস্ত, বাসায় মেহমান।তুমি আবার মেয়ে দেখতে গিয়ে মেয়ের দিকে তাকিয় না যেন,চোখ তুলে নেব।” কি সাংঘাতিক!!!!
হঠাৎ করে কে যেন বলে উঠল - আরো দেখুন….
“রিঙ্কু মা চা নিয়ে এস তো।” বাহ, মনটা অনেকক্ষুন ধরেই চা চা করছিল, রিঙ্কু নামটাও বেশ সুন্দর, আমারটার নাম আবার রিঙ্কি। মনে মনে কল্পনার জগতে চলে গেলাম, রিঙ্কি আমাদের জন্য চা নিয়ে আসছে মা বাবা সবাই ওকে দেখে বলছে, বাহ বাহ কি সুন্দর মেয়ে বউ হিসেবে পার্ফেক্ট আহা …..
ভাবনার জগৎ থেকে সাথে সাথে বেরিয়ে আসলাম, যখন শুনলাম আবারো কে যেন বলল,
“আর রিঙ্কি তুই নুডলস এর প্লেট গুলো নিয়ে আয়।”
ওয়েট, হোয়াট? রিঙ্কি? ঠিক শুনলাম আমি?? না রিঙ্কুই বলেছে হয়ত আমি ভুলে রিঙ্কি শুনেছি। আমি আবার নিশ্চিন্তে চা এর দিকে মনযোগ দিলাম, এর মধ্যে কেউ আবার নুডুলস সামনে রাখল।সামনে তাকিয়ে যা দেখলাম, এর জন্য আমি একদম প্রস্তুত ছিলাম না রাসেল ভাই।দেখি আমার গার্লফ্রেন্ড রিঙ্কু আমার দিকে রাগী রাগী চোখে তাকাই আছে। মেয়ের কোন এক গার্জিয়ান বলল, “এইটা আমাদের ছোট মেয়ে রিঙ্কু, একটু দুষ্ট কিন্তু এমনি পড়ালেখায় ভাল। দুই বোনের মধ্যে মারাত্মক খাতির, কে জানে বড়টার বিয়েটা হয়ে গেলে ও কিভাবে থাকবে??”
আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল, তার মানে আমি আমার গার্লফ্রেন্ড এর বাসায় তারই বোনকে বিয়ের জন্য দেখতে এসেছি?? ও মাই গড…..!!!!!! সবাই কথা বলছে, আমি চুপচাপ বসে আছি।সামনে খাবার রাখা তাও খেতে পারছি না,ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে।
বাঁশটাতো খেয়ে বসেই আছে সেখানে আরো তেল মাখিয়ে দিল রিঙ্কুর দেওয়া একটা মেসেজ। মেসেজটায় লেখা ছিল,
“ভালই হল, আজকেই তোমার বাবা মাকে পাকা দেখা দেখে যেতে বল।দিদির সাথে বিয়ে ঠিক করে দাও, বিয়ের দিন দিদির জায়গায় আমি বসে পরব।কেস সলভ লাভ ইউ বেবি “
সর্বনাশ,মেয়ে বলে কি?? এই মেয়ে তো আমাকে সুস্থ থাকতে দেবে না।ওদিকে আমার নুডুলস ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।কোন দিকে যে মনোযোগ দেব বুঝতে পারছি না।বাবা মা মেয়েকে প্রশ্ন করছে, আমি শুনছি। কিন্তু মাথায় আমার চিন্তা রিঙ্কু কি থেকে যে কি করে ফেলে বলা যায় না। আমি ওকে মেসেজ দিয়ে দিলাম যে, “প্রব্লেম নাই আমি বলে দেব আমার মেয়ে পছন্দ হয় নাই, বিয়ে আমি তোমাকেই করব।”
সাথে সাথে রিপ্লাই এল,
“কি??? আমার দিদিকে রিজেক্ট করবা?? এত বড় সাহস??? খুন করে ফেলব তোমাকে। তুমি এমন কিছু কর যাতে দিদি তোমকে রিজেক্ট করে।”
কি বিপদ!!! এবার কি করব??? না প্রেম করাই বিপদ। এখন প্রেম না করলে সুন্দর ভাবে মেয়ে দেখে পছন্দ করে বিয়ে করে নিতাম কোন প্যারা ছিল না।আর এখন দেখ কোথায় ফেসে গেছি।এবার অপেক্ষা করছিলাম কখন আমাকে আর রিঙ্কিকে আলাদা কথা বলতে পাঠাবে, তখন একটা কিছু বলে মেনেজ করে নেব।
তো অবশেষে সেই টাইমটা আসল, কে যেন বলল, “যাও বাবা তোমাদের আলাদা করে কোন কথা বলার থাকলে বলতে পার।” আমিতো সাথে সাথেই রেডি, রিঙ্কিও দেখলাম একটু লজ্জা লজ্জা চোখে উঠে দাঁড়ালো, মিষ্টি করে বলল “চলেন ছাদে যাই।” আমি তার সাথে আস্তে আস্তে ছাদে চলে গেলাম।
অনেক্ক্ষণ ধরে চুপচাপ বসে আছি,কেউ কিছু বলতে পারছি না।তারপর প্রথম রিঙ্কি বলল,
“আর কতক্ষণ চুপ থাকবেন? কিছু বলুন”
“আপনিই শুরু করুন। কারন আমি শুরু করলে আপনি আর বলতে পারবেন না।”
“আচ্ছা তবুও আপনিই বলুন।”
“ওকে।দেখুন বিয়ের আগে একে অপরকে জানাটা খুব জরুরি তাইতো? আর আপনিও বোধয় চান আমাকে জানতে??”
“হুম অবশ্যই।”
“তাহলে শুনুন, আমি বছরে মাত্র একদিন মদ খাই, যেদিন সকাল বেলা সূর্য ওঠে আর বিকালে সূর্য ডোবে।আর গাঞ্জা খাই মাঝে মাঝে যেদিন ভিটিভিতে লেবু চাষের খবর দেখায় শুধু সেইদিন। আর সিগারেট খুব একটা খাই না। মাত্র দুই তিন প্যাকেট। “
“(কিছুক্ষণ চুপ থেকে) আর কোন গুন বাকি আছে ভাইয়া??”
“হ্যাঁ, আমি এই বিয়েতে বিশ্বাসী না,লিভিং রিলেশনশিপইতো বেস্ট। “
“আর কিছু??”
মনে মনে বললাম, আর কত নিচে নামাব নিজেরে??? এরপরও কি বিয়েতে রাজি হবে?? কে জানে?? আমার মত ইস্মার্ট ছেলে পাইছে সামনে বলা যায় না রাজি হইয়াও যাইতে পারে।আর একটু ডোজ দেই।
“হ্যাঁ, আমার গার্লফ্রেন্ড আছে বর্তমানে পাঁচটা।আগে আরো ২০ জন ছিল, সবাইকেই টাইম পাস কইরা ছাইড়া দিছি।এটাই আমার কাজ। এখন বিয়ের পর এগুলো একটু কম করার চেষ্টা করব।আপনি রাজিতো বিয়েতে???”
আমার কথাট বলার সাথে সাথে কোত্থেকে যেন রিঙ্কু দৌড়ে এসে লাফালাফি আর চিৎকার শুরু করল,
“আমার সর্বনাশ হয়ে গেল, এই ছেলে আমার সাথেও টাইম পাস করছে।মদ খায়, গাঞ্জা খায় আমারে বলেও নাই কিছু, বাচ্চা মেয়ে আমি, ওর মিষ্টি কথায় ভুইলা প্রেমে পইরা গেছি।ও আপু তুই আমারে বাঁচা।এই পোলারে ছাড়িস না বাইন্দা পিডান দে ওরে।আজকে আমি লুকাইয়া তোদের কথা না শুনলেতো চিনতেই পারতাম না ওর আসন চেহারা।হায়রে এবার আমার কি হবে??? আমাকেও ধোকা দিয়ে দিল।”
আমি আর রিঙ্কি দুইজনেই বোকা হইয়া রইলাম।আমি কিছু বলতে যাব তখনই দেখি দুই বোন দুইটা লাঠি নিয়া আমার দিকে আসতেছে।আমি জানের ভয়ে ছাদ থেকে লাফ দিয়া পালাইছিলাম,এরপর আর কিছু মনে নাই।যখন চোখ খুলি তখন আমি পাশের দেশ নোয়াখালীতে চিকিৎসাধীন। ওই কাহিনীর পর আমি নাকি ছয় মাস পাগল আছিলাম। - আরো দেখুন…