বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে

  • আপডেট সময় : ০৬:৪৬:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৬ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব ধরনের জ্বালানী তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার মধ্যরাত থেকে গ্রাহকরা বর্তমানের তুলনায় কম দামে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেন কিনতে পারবেন।

বিশ্ব বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন দাম নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পেট্রোল ও অকটেনের দাম লিটারপ্রতি ছয় টাকা করে কমানো হয়েছে। ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি এক টাকা ২৫ পয়সা কমেছে।

এতে করে অকটেনের নতুন দাম হবে ১২৫ টাকা (আগের দাম ছিল ১৩১ টাকা), পেট্রোলের নতুন দাম হবে ১২১ টাকা (আগের দাম ছিল ১২৭ টাকা), এবং ডিজেলের নতুন দাম হবে ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা (আগের দাম ছিল ১০৬ টাকা ৭৫ পয়সা)।

শনিবার রাত ১২টার পর, অর্থাৎ পহেলা সেপ্টেম্বরের প্রথম প্রহর থেকে নতুন মূল্য কার্যকর হবে।

শনিবার সকালে খুলনার খালিশপুরে নির্মাণাধীন রুপসা ৮০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, তাই দেশে দামও কমানো হয়েছে। এছাড়া, বর্তমান ফর্মুলার অনুযায়ী, জ্বালানি তেলের দামের মধ্যে বিপিসির জন্য যে মুনাফা নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটাও কমানো হয়েছে।”

উপদেষ্টা আরো জানান, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার বিপিসির মুনাফা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে, ২৮ আগস্ট পেট্রোবাংলায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ও অধিদফতরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ফাওজুল কবির খান বলেন, দেশের মানুষ যেন কম দামে তেল কিনতে পারেন, সেই লক্ষ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তেলের দাম নির্ধারণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এর আগে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিধান বাতিল করে সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

গত ২২ আগস্ট উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নতুন খসড়া অধ্যাদেশ অনুমোদিত হয়। এতে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আইন, ২০০৩’ সংশোধন করে অধ্যাদেশে নির্বাহী আদেশে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ৩৪(ক) ধারা বিলুপ্ত করা হয়।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে, সরকার ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’ জারি করে, যা ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ এবং সমন্বয়ের ক্ষমতা প্রদান করে। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকার বিশেষ পরিস্থিতিতে জনশুনানি ছাড়াই নিজস্বভাবে জ্বালানি গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করতে পারতো।

পরে, ২০২৩ সালের ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে এই অধ্যাদেশটি পাস হলে তা আইনে পরিণত হয়। এর পরপরই মন্ত্রণালয় থেকে দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও তেলের দাম বাড়ানো শুরু হয়, যা গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।

এই সময় ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩’ সংশোধন করে ৩৪(ক) ধারা যোগ করা হয়, যা সরকারকে নির্বাহী আদেশে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করার ক্ষমতা দেয়।

তবে, ৩৪(ক) ধারা বিলুপ্ত ঘোষণা করার পর, আগের নিয়ম অনুযায়ী গণশুনানির মাধ্যমেই বিইআরসি জ্বালানির দাম নির্ধারণ করার কথা রয়েছে। সর্বশেষ, চলতি বছরের জুন মাসে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। ১ জুন প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ছিল ১০৬.৭৫ টাকা, অকটেন ১৩১ টাকা, এবং পেট্রোল ১২৭ টাকা, যা ১ সেপ্টেম্বর থেকে কমেছে।

আরো দেখুন….

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

Categories

বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে

আপডেট সময় : ০৬:৪৬:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব ধরনের জ্বালানী তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার মধ্যরাত থেকে গ্রাহকরা বর্তমানের তুলনায় কম দামে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেন কিনতে পারবেন।

বিশ্ব বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন দাম নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পেট্রোল ও অকটেনের দাম লিটারপ্রতি ছয় টাকা করে কমানো হয়েছে। ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি এক টাকা ২৫ পয়সা কমেছে।

এতে করে অকটেনের নতুন দাম হবে ১২৫ টাকা (আগের দাম ছিল ১৩১ টাকা), পেট্রোলের নতুন দাম হবে ১২১ টাকা (আগের দাম ছিল ১২৭ টাকা), এবং ডিজেলের নতুন দাম হবে ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা (আগের দাম ছিল ১০৬ টাকা ৭৫ পয়সা)।

শনিবার রাত ১২টার পর, অর্থাৎ পহেলা সেপ্টেম্বরের প্রথম প্রহর থেকে নতুন মূল্য কার্যকর হবে।

শনিবার সকালে খুলনার খালিশপুরে নির্মাণাধীন রুপসা ৮০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, তাই দেশে দামও কমানো হয়েছে। এছাড়া, বর্তমান ফর্মুলার অনুযায়ী, জ্বালানি তেলের দামের মধ্যে বিপিসির জন্য যে মুনাফা নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটাও কমানো হয়েছে।”

উপদেষ্টা আরো জানান, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার বিপিসির মুনাফা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে, ২৮ আগস্ট পেট্রোবাংলায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ও অধিদফতরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ফাওজুল কবির খান বলেন, দেশের মানুষ যেন কম দামে তেল কিনতে পারেন, সেই লক্ষ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তেলের দাম নির্ধারণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এর আগে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিধান বাতিল করে সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

গত ২২ আগস্ট উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নতুন খসড়া অধ্যাদেশ অনুমোদিত হয়। এতে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আইন, ২০০৩’ সংশোধন করে অধ্যাদেশে নির্বাহী আদেশে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ৩৪(ক) ধারা বিলুপ্ত করা হয়।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে, সরকার ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’ জারি করে, যা ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ এবং সমন্বয়ের ক্ষমতা প্রদান করে। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকার বিশেষ পরিস্থিতিতে জনশুনানি ছাড়াই নিজস্বভাবে জ্বালানি গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করতে পারতো।

পরে, ২০২৩ সালের ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে এই অধ্যাদেশটি পাস হলে তা আইনে পরিণত হয়। এর পরপরই মন্ত্রণালয় থেকে দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও তেলের দাম বাড়ানো শুরু হয়, যা গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।

এই সময় ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩’ সংশোধন করে ৩৪(ক) ধারা যোগ করা হয়, যা সরকারকে নির্বাহী আদেশে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করার ক্ষমতা দেয়।

তবে, ৩৪(ক) ধারা বিলুপ্ত ঘোষণা করার পর, আগের নিয়ম অনুযায়ী গণশুনানির মাধ্যমেই বিইআরসি জ্বালানির দাম নির্ধারণ করার কথা রয়েছে। সর্বশেষ, চলতি বছরের জুন মাসে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। ১ জুন প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ছিল ১০৬.৭৫ টাকা, অকটেন ১৩১ টাকা, এবং পেট্রোল ১২৭ টাকা, যা ১ সেপ্টেম্বর থেকে কমেছে।

আরো দেখুন….